জীবনের শুরু ও রাজনৈতিক উত্থান

জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার নেতৃত্বে গঠিত হয় 'জেড ফোর্স'। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রে আসেন এবং ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনা

১৯৮১ সালের ৩০ মে ভোররাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অবস্থানকালে একদল সেনা কর্মকর্তা আক্রমণ চালিয়ে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মতিউর রহমান। হত্যার পর চট্টগ্রামে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং বিদ্রোহীরা চট্টগ্রাম বেতার থেকে ভাষণ প্রচার করে। তৎকালীন সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে সরকার বিদ্রোহ দমন করে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।

জাতীয় শোক ও স্মরণ

জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ও তার সমর্থকরা দেশব্যাপী আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল এবং শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করে। শেরেবাংলা নগরে তার মাজারে দলীয় নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "জিয়াউর রহমান ছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার ও সফল রাষ্ট্রনায়ক" ।

উত্তরাধিকার ও বিতর্ক

জিয়াউর রহমানের শাসনামল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য স্মরণীয় হলেও, তার শাসনামলে বিরোধীদের দমন এবং ১৯৭৫ সালের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বৈধকরণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে তার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ আজও দেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে ।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতি তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং তার অবদানকে সম্মান জানায়।